কোকোর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না, এ রহস্য উদঘাটন করা হবে : ডা. জাহিদ
২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:১৮ এএম | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২৬ এএম
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, এ মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা হবে। এর সঙ্গে জড়িত যারাই থাকুক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।রোববার (২৬ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের একটি রেস্টুরেন্টে আরাফাত রহমান কোকো মেমোরিয়াল ট্রাস্ট আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. জাহিদ বলেন, আরাফাত রহমান কোকো কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন না। তিনি ক্রীড়াঙ্গনে একজন মেধাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। তার সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে আজ বাংলাদেশের ক্রিকেট সারা পৃথিবীতে একটি পর্যায়ে চলে এসেছে। এ অবদান তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে দেওয়া হলে সেটি ইতিহাসকে বিক্রিত করা হবে।
তিনি বলেন, আরাফাত রহমান কোকোকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তার মৃত্যুকে আমরা কখনোই স্বাভাবিকভাবে নিইনি এবং এখনো নিচ্ছি না। কাজেই আমরা এটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি, এর মূল রহস্যে কী আছে। সে অনুযায়ী এর সঙ্গে সম্পৃক্ত যারাই আছেন তাদের আইনের আওতায় এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে সবসময়ই চেষ্টা করব।
এসময় দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের সাধারণ মানুষ জিয়া পরিবারের প্রতি যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন এজন্য তিনি কৃতজ্ঞতা জানান। ডা. জাহিদ বলেন, এখানে অনেকেই আছেন যারা নিজ কানে শুনেছেন ‘আমি মেজর জিয়া বলছি’। ২৬ এবং ২৭ মার্চ ১৯৭১ আমরা অনেকেই শুনেছি। কাজেই যারা আমরা শুনেছি তারা জানি, যারা পালিয়ে গেছে তারা দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পালিয়ে গেছে, আবার কেউ আত্মসমর্পণ করেছেন। আর যে মানুষটি নিজের দুটি নাবালগ শিশুর কথা ভুলে গিয়ে দেশপ্রেমের কথা চিন্তা করে নিজের সহধর্মিণীর কথাও মনে রাখেননি। শুধু সামনে এগিয়ে গেছেন দেশ ও দেশপ্রেমে সাড়া দিয়ে। নিজের পরিবারকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যে মানুষটি অস্ত্রহাতে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন সেই মানুষটি হচ্ছেন জিয়াউর রহমান।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে ঘোষণা হয়েছে, আর সিলেটে প্রথম সেক্টর কমান্ডারদের মিটিং হয়েছে জেনারেল ওসমানীর নেতৃত্বে, সেখানেই প্রথম ১ নম্বর সেক্টর কমান্ডার হয়েছেন জিয়াউর রহমান। আবার সেখানেই জেড ফোর্স গঠন করা হয়েছে, সেটার কমান্ডারও জিয়াউর রহমান। কাজেই বিএনপি করবেন, গর্ব করবেন। আপনাদের ইতিহাস পালিয়ে যাওয়ার নয়, সামনের দিকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, জিয়াউর রহমান সেই মানুষ, ৭ নভেম্বর যে মানুষকে এ দেশের সিপাহি জনতা বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে এনেছিল। তখন বিএনপি ছিল না, কোনো অঙ্গ সহযোগী সংগঠন ছিল না। কিন্তু মানুষের বিশ্বাস ছিল ওই মানুষটির ওপর, যে উনাকে যদি দায়িত্ব দেওয়া যায় তাহলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অখণ্ড থাকবে। তিনি নিজেই ক্ষমতায় বসেননি। সিপাহি জনতা তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন। তারপরও তিনি গণভোট দিয়েছিলেন। তখন জনগণের মেন্ডেট নিয়েই ক্ষমতায় ছিলেন। মাত্র সাড়ে ৪ বছরের শাসনামলে তলাবিহীন দেশের তলা লাগিয়েছিলেন। কাজেই যারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কথা বলেন, আগে তারা আয়নায় নিজের চেহারা দেখবেন, জিয়াকে নিয়ে কথা বলার অবস্থা আপনাদের আদৌ আছে কি না।
ডা. জাহিদ বলেন, দেশে যদি স্বাধীনতার ঘোষণা না হতো, মুক্তিযুদ্ধ না হতো, আপনারা কোনো অবস্থাতেই ’৯০ও দেখতেন না, ’২৪ এর ৩৬ জুলাইও দেখতেন না। বহু মানুষের ত্যাগের ওপর দাঁড়িয়েই আজকের বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, আমরা যেমন আবু সাঈদের কথা ভুলব না, মুগ্ধের কথা ভুলব না ঠিক একইভাবে ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের কথাও ভুলব না। গত ১৫ বছর যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যুদ্ধ করেছেন, তাদের সবাইকে যার যার সম্মান দিতেই হবে। কাজেই বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন না।
ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উদ্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ক্ষমতার মসনদে বসে রাজনৈতিক দল করার কেউ কেউ চেষ্টা করবেন, আবার চুপচাপ তাল দেবেন অন্যদেরকে রাজনৈতিক দল করার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে টাকা নিয়ে ডিস্ট্রিবিউট করবেন, সংগঠক হবেন ভালো কথা কিন্তু রাজনৈতিক দল করতে হলে সব কিছু ছেড়ে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো মাঠে আসুন, কর্মসূচি দিন।
জনগণকে সংগঠিত করুন। জনগণ যাকে ভালো মনে করবে তাকে গ্রহণ করবে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই নিজেদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করবেন না। নিজেদের অতি বা প্রতি বিপ্লবী ভাবার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন বিএনপির জন্ম জনগণের মধ্য থেকেই হয়েছে। খালেদা জিয়া একদিনে তৈরি হননি। আগুনে পুড়তে পুড়তেই আজকের খালেদা জিয়া।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ মালেক বলেন, খালেদা জিয়া তো সুস্থ অবস্থায় জেলে গেছেন। তাকে তিলে তিলে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর বিচার করতেই হবে। আর এখন ছাত্ররা দেশ চালাচ্ছেন। ছাত্ররা দেশ চালালে শিক্ষকরা কী করবেন?
আরাফাত রহমান কোকো মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কোঅর্ডিনেটর আবু নাছের শেখ ও শরফরাজ শরফুর পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ প্রমুখ।
বিভাগ : রাজনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নরসিংদীতে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত মা
কর্মবিরতি : সারা দেশে বন্ধ হলো ট্রেন চলাচল
ইউরো জেতানো দে লা ফুয়েন্তে ২০২৮ পর্যন্ত স্পেনের কোচ
সিলেটকে হারিয়ে প্লে অফের দৌড়ে এগিয়ে গেল রাজশাহী
টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া বাংলাদেশ
রূপালী ব্যাংকের ‘রূপালী ই-ব্যাংক’ অ্যাপ উদ্বোধন
বেলকুচিতে ব্রোকলি চাষে সাফল্য
সালথায় যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা : তিনজন কারাগারে
তাহসিনের পাশে বিসিবি
তামাক কোম্পানির ফাঁদে পড়ে মাদকে আসক্ত হচ্ছে তরুণ সমাজ; প্রতিরোধে চাই সমন্বিত উদ্যোগ
জিরা চাষে স্বপ্ন দেখছেন গোদাগাড়ীর কৃষকরা
ন্যায়বিচারের স্বার্থে হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে ভারত
দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছি, নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ: কাহের শামীম
হাতিয়ায় বন্দোবস্তকৃত ভূমি বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি
আইসিএমএবি’র প্রেসিডেন্ট মাহতাব উদ্দিন, সচিব হাসনাইন তৌফিক
শৈশবের ক্লাবে ফিরছেন নেইমার
অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু
পাকুন্দিয়ায় ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই চলছে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি
পঞ্চগড়ে চার বিচারকের অপসারণ দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ
ময়মনসিংহে আস্থা লাইফের ব্যবসায়িক সভা